More

    যেতে নাহি দেব হায় তবু যেতে দিতে হয় বিদায় ডেভিড এ্যানড্রিউ ওয়ার্নার

    গড়পড়তা অস্ট্রেলিয়ানদের চেয়ে বেশ বেটে, পেটোয়া শরীর, মোটা ঠোট, গায়ের রং যদিও শ্বেত তবে আর যাই বলেন তাকে সুদর্শন বলা চলে না। তবে কি নিদারুণ সাবলীল ভঙ্গিমায় বা হাতে ক্রিকেট বলটাকে শাসন করেন! তিনিই অস্ট্রেলিয়ান প্রথম ক্রিকেটার যিনি ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা ছাড়া জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন। আর কেন‌ইবা ডাকা হবে না! যেভাবে বলকে বেধড়ক পেটাতে পারেন, আর কজন‌ইবা পারেন অমন করে বলকে গ্যালারিতে আছড়ে ফেলতে।

    ডেডিড এ্যানড্রিউ ওয়ার্নার, অস্ট্রলিয়া

    হ্যা, আমরা ডেভিড ওয়ার্নারের কথা বলছি; ডেভিড এ্যানড্রিউ ওয়ার্নার। জন্ম ২৭ অক্টোবর,  ১৯৮৬ খ্রি. প্যাডিংটন, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া। 

    অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেক ১১ জনুয়ারি, ২০০৯ খ্রি. টি২০ তে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে। ওডিআই অভিষেক‌ও ওই বছরেই ১৮ জানুয়ারি, সাউথ আফ্রিকার‌ই বিপক্ষে। মারদাঙ্গা ব্যাটিং -এর জন্য বেশি পরিচিত ‌হ‌ওয়ায় হয়ত টেস্টে ডাক পেতে প্রায় বছর তিনেক অপেক্ষা করতে হয়েছে। একসময় ওয়ার্নারকে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের জন্য শুধু বিবেচনায় আনা হতো। অবশেষে ১ ডিসেম্বর, ২০১১ খ্রি. নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়। যেখানেও অন্যান্য ফরম্যাটগুলোর মত আলোর ফুলকি ফুটিয়েছেন। আঠারো হাজারের উপরে আন্তর্জাতিক রান; যার মধ্যে টেস্টেই ৪৫ ছুঁই ছুঁই গড়ে সাড়ে আট হাজারের বেশি রান। ৪৯ টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি, যার ২৬ টি টেস্টে, ২২ টি ওডিআই, ১ টি টি২০ তে। তাছাড়া সাড়ে পঁয়তাল্লিশ গড়ে ১১ হাজারের উপর ফার্স্ট ক্লাস রান সাথে ৩৪ সেঞ্চুরি। ওপেনার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি। এমন সব ঈর্ষণীয় রেকর্ড গড়েছেন ডেভিড। 

    শেষ টেস্টে পাকিস্তানি খেলোয়াড়রা ওয়ার্নারকে গার্ড অফ অনার দিচ্ছে


    টেস্ট ও ওডিআই থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। পাকিস্তানের সাথে চলমান টেস্ট‌ই সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ হতে যাচ্ছে ওয়ার্নারের। তবে ওয়ার্নারকে শুধু তার ব্যাটিং স্কিল দিয়ে বিবেচনা করলে ভুল হবে। পিকুলিয়ার ক্যারেক্টারের এক ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার। রগচটা, ড্রেসিং রুমে মারামারি করা, প্রতিপক্ষকে স্লেজিং করা, বল টেম্পারিং করা, মাথা ঠান্ডা রেখে দায়িত্ব নিয়ে মাঠের ক্রিকেটে চিতার মত লড়ে যাওয়া। সর্বশেষ তার পরিবারের জন্য নিবেদিত প্রাণ, নিজের কণ্যাদের প্রতি স্নেহশীল এক পিতা। হার না মানা এক যোদ্ধা।

    তিন কণ্যার সাথে ডেভিড ওয়ার্নার

    আইপিএলে হায়দ্রাবাদের হয়ে অধিনায়কত্ব নতুন এক ওয়ার্নারের পরিচয় দেয়, যে পরিস্থিতি অনুযায়ী ধৈর্য ধরে থাকে, সুযোগ বুঝে হাত খোলে। নিজের খেলোয়াড়দের আগলে রাখা, তাদের শক্তি-দূর্বলতা বোঝা, সঠিকভাবে ব্যবহার করা।

    আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দলগতভাবে সব‌ই জিতেছেন। ২০১৫, ২০২৩ -এর ওডিআই বিশ্বকাপ, ২০২১ টি ২০ বিশ্বকাপ, আসসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রপি, টেস্ট চ্যাম্পীয়নশীপ‌ও জিতেছেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে। হয়ত অবসরের এটাই সেরা সময়, ফর্মটা এখন ঠিক ওয়ার্নার সুলভ নাই কিছুদিন ধরে, সব‌ই জিতে ফেলেছন ক্যারিয়ারে, বয়সটা ৩৮ ছুঁই ছুঁই। তাই হয়ত স্বাধের ব্যাগি গ্রিনটা তুলে রাখতে চাইছেন।

    Related articles

    Comments

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Share article

    spot_img

    Latest articles

    Newsletter

    Subscribe to stay updated.